মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৩

লেজার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ



লেজার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
ডা. মো. আজিজুল হক, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা।
ডা. আজিজুল হক বলেন, অনেক ধরনের সমস্যা আছে যা লেজার ছাড়া সম্ভব নয়। যেমন জন্মদাগ, চর্মদাগ, পোড়া ও বিভিন্ন দাগ। তবে মেছতা চিকিৎসার জন্য লেজার প্রযুক্তি থাকলেও তা নিয়ে আছে অনেক দ্বিমত। তিনি বলেন, এর জন্য অনেক উচ্চমানের যন্ত্র প্রয়োজন, যা বাংলাদেশে নেই। হয়তো প্রযুক্তির বিবর্তনে আসবে। মেদ কমাতে অনেক ধরনের লেজার ট্রিটমেন্ট থাকলেও

এগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নেই। যদি কেউ মেদ খুব তাড়াতাড়ি কমাতে চান, তাহলে সার্জিক্যাল অপারেশন করাই ভালো। কিন্তু এটাও ঠিক নয়। মেদ কমাতে বিভিন্ন ডায়েট ও ব্যায়াম সবচেয়ে উপযোগী। এতে একটু বেশি সময় লাগলেও সবচেয়ে উপযোগী ট্রিটমেন্ট এটি।


ডা. জাহানারা ফেরদৌস খান
ম্যানেজার
লেজার মেডিকেল সেন্টার লিমিটেড

পৃথিবী এখন অনেকটাই এগিয়ে গেছে মেডিকেল সায়েন্সে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লেজার ট্রিটমেন্ট। এর গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু তা জানতে কথা হলো বাংলাদেশের লেজার মেডিকেল সেন্টার লিমিটেডের ম্যানেজার ডা. জাহানারা ফেরদৌস খানের সঙ্গে।


* লেজার ট্রিটমেন্ট আসলে কী?
** লেজার চিকিৎসা বাংলাদেশে তুলনামূলক নতুন প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। লেজার চিকিৎসা ডায়াগনস্টিক ও থেরাপিউটিক ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করে, যা বিশেষ ধরনের মনোক্রাম্যাটিক লাইট বা আলো। মেডিসিনের মতো লেজারও একটি সহজ চিকিৎসা পদ্ধতি। লেজার আসলে বিভিন্ন উপায়ে যন্ত্রের মাধ্যমে আলোক প্রক্ষেপণের পদ্ধতি, যা আলোর ফোটন কণার সম্মিলিত শক্তি বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়। আর এই বাড়িয়ে দেওয়া আলোকণার শক্তি দিয়েই চালানো হয় চিকিৎসা। অনেক ক্ষেত্রে এটি মেডিসিনের চেয়েও ভালো ফল দেয়।


* বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এর অবস্থা কেমন?
** আমরা মূলত কাজ শুরু করি ২০০৪ সালে। এর গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে ধীরে ধীরে। কারণ তখন ছিল এটা একটা নতুন টেকনোলজি। যেহেতু এটা মেডিকেলেরই একটি অ্যাডভান্স টেকনোলজি, তাই মানুষ সময়ের সঙ্গে একে গ্রহণ করেছেন। আমরা প্রথমে কাজ শুরু করি ডারমাটোলজি দিয়ে। কিছু ট্রিটমেন্টের সীমাবদ্ধতা আছে, যা লেজার আসাতে কাটিয়ে ওঠা গেছে। এরই মধ্যে ৯ বছর পেরিয়ে গেছে। আরও অনেক লেজার এসেছে। সঙ্গে সঙ্গে উন্নত হয়েছে এই চিকিৎসা পদ্ধতি। প্রসারও ঘটেছে অনেক। এসেছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। 


* এখানে কী ধরনের ট্রিটমেন্ট করা হয়?
** সর্বপ্রথম স্কিন বেজ লেজার চিকিৎসা চালু করেছিলাম। এর পর ধীরে ধীরে অন্য সেক্টর বেড়েছে। অ্যাটথেটিক লেজার, ডেন্টাল লেজার, অ্যান্টি এইডি লেজার, সার্জিক্যাল লেজারসহ আরও অনেক লেজার ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। 


* শিশুদের ক্ষেত্রে লেজার চিকিৎসা কতটুকু নিরাপদ?
** যে কোনো বয়সের শিশুর ক্ষেত্রে লেজার চিকিৎসা সম্পূর্ণ নিরাপদ। অনেকে আসে জন্ম দাগ নিয়ে।


* অনেক চিকিৎসকের মতে, এ ধরনের দাগ পুরোপুরি যায় না_ এতে আপনার মত কী?
** লেজার আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। উন্নত দেশগুলোয় এটি খুবই জনপ্রিয়। প্রতিটি সমস্যার কিছু কারণ থাকে। সেই কারণ দূর করতে পারলেই মূলত সমস্যার সমাধান করা যায়। কারও ব্রণের সমস্যা হলে তা হরমোনের কারণে হয়। তাকে লেজারের মাধ্যমে ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার সঙ্গে সঙ্গে ওই হরমোনের চিকিৎসাও করতে হবে। 


* লেজার ট্রিটমেন্ট ছাড়া কি এসব সমস্যার সমাধান হয় না?
** অনেক সমস্যা আছে যেগুলো লেজার না করিয়ে ওষুধের মাধ্যমে নির্মূল সম্ভব। সেক্ষেত্রে আমরা রোগীকে মেডিসিন অফার করি। আমাদের কাছে তিনটি অপশন আছে_ লেজার, মেডিসিন ও কম্বাইন্ড। তবে তা নির্ভর করে রোগীর রোগের ধরন দেখে। আমাদের কয়েক জন অভিজ্ঞ কনসালট্যান্ট আছেন। তারাই এসবের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দাগের ক্ষেত্রে লেজারই উত্তম।
ষ সব ওষুধের একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। লেজারের বেলায় সেটি কতটুকু?
ষষ এটি অনেক নিরাপদ একটি চিকিৎসা। আমরা প্রচুর রোগী প্রতিনিয়ত চিকিৎসা করছি এবং তাদের কাছ থেকে ভালো ফল পাচ্ছি। তবে ভিন্ন ওষুধের জন্য ভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। যেমন জ্বরের জন্য আমরা যে নাপা বা প্যারাসিটামল খাই, এতে লিভার ড্যামেজ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু কেউ একটার জায়গায় একশ'টা খাই না। আমাদের ট্রিটমেন্ট এই প্যারাসিটামলের মতো। এ ধরনের চিকিৎসা করাতে যারা আসেন, তারা অবশ্যই একজন এক্সপার্টের সাহায্য নেবেন।


* লেজার ফেসিয়াল ও লেজার রেসপারেটরি সিস্টেমের কাজ কী?
** লেজার ফেসিয়াল যে কেউ করাতে পারেন। মুখের মসৃণতা ও স্পেসিফিক ট্রিটমেন্টের জন্য কনসালট্যান্টের সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়। তবে যাদের ত্বক ভালো তাদের একবার করলেই যথেষ্ট। রেসপারেটরি সিস্টেম হচ্ছে, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট, ঘনঘন হাঁচি হওয়া থেকে এসব অ্যালার্জির লক্ষণ পাওয়া যায়। সেগুলো প্রতিকারের জন্য আধুনিক মেশিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।


* ডায়েট ও বডি শেপিং বা ফ্যাট অ্যানালাইসিস পদ্ধতি সম্পর্কে বলুন।
** সার্জিক্যাল চিকিৎসার মাধ্যমে পেটের চর্বি গলিয়ে দেওয়া হয়। এতে রিস্ক কম। এ ছাড়া বায়োকম (ওয়েটলস, হরমোনাল ব্যালেন্স থেরাপি), বেসিক আল্ট্রাস্লিম ফর বডি শেপিংয়ের মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞ কনসালট্যান্ট রয়েছেন। তারা বিভিন্ন ডায়েট প্ল্যান দেন। নিউট্রিশন কনসালট্যান্ট রয়েছেন এসব কাজে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন