শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৪

শীতে নারীর প্রিয় বন্ধু হতে পারে কুমড়ো


232 শীতে নারীর প্রিয় বন্ধু হতে পারে কুমড়োফ্যাশন ও ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে শীতে নারীর প্রিয় বন্ধু হতে পারে কুমড়ো। অবশ্য পুরুষকেই বা বাদ দিই কেন? ত্বকের কারবারি কি নারী একাই? এই শীতে বিউটিশিয়ানরা জানাচ্ছেন, কুমড়োর মাহাত্ম্য আমরা অনেকেই সঠিক চিনে নিতে পারিনি। কিন্তু ওই গোল, কুতকুতে, খেতে ভালমন্দ মিশিয়ে সব্জির গুণপণা নিয়ে একেবারে উচ্চকণ্ঠ বিশেষজ্ঞরা। পেলব, কোমল, তদুপরি গ্লোয়িং ত্বক পেতে কুমড়োর এক-দুটো না, প্রায় হাফ ডজন কেরামতি স্বীকৃত তাঁদের কাছে।

কুমড়োর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বলছে, এতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেণ্ট আছে। ফলে, শীতের পূর্ণমাত্রায় হুল্লোড়ে যে পরিমাণ অতিরিক্ত তেল-মশলা শরীরে যাচ্ছে, তা পরিষ্কার করে ত্বককে সুস্থ রাখতে কুমড়ো কার্যকর বইকি। বেকবাগানের হেলথ হাব-এর ক্লিনিংকে বসে ডায়েটিশিয়ান চিন্ময় সান্যাল
জানাচ্ছেন, ‘শীতকালে ত্বক এমনিতেই রুক্ষ হয়ে যায়। বাতাসের আর্দ্রতা কমলে ত্বক খসখসে হতে বাধ্য। কিন্তু শরীরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকলে সেই প্রবণতা অনেক কমে। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ক্যাপসুল দিয়ে নানা রকম মাসাজ এর ওপরে গ্লোয়িং ত্বকের চাহিদা মেটায়। শীতের সব্জির মধ্যে গাজর আর পালং শাকে ভিটামিন এ-র কথা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু কুমড়োও খুব উপকারী এই ক্ষেত্রে। কুমড়োতে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন থাকে। আর থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শরীরে প্রবেশ করে তা ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়। ফলে উপযুক্ত জল সরবরাহে ত্বকের পেলবতা বজায় থাকে।’
এবার বরং একটু দেখে নেওয়া যাক ডায়েট চার্ট অনুযায়ী কুমড়োর ত্বকমান্যতার ভাগ কতটুকু। বিশেষজ্ঞ মতে, আধ কাপ কুমড়োর রসে প্রায় ১ লিটার বোতলের পরিমাণে ইমিউনিটি বাড়ানোর ভিটামিন থাকে। আর থাকে তত পরিমাণ আলফা ক্যারোটিন। তা ত্বক এবং চুলের জেল্লার জন্য বেশ উপকারী। কুমড়োর বৈজ্ঞানিক ব্যাখা বলছে, রুটির চেয়ে এতে ক্যালোরি কম। সকালে হাত রুটি খেয়ে যে পরিমাণ ফাইবার আর ক্যালোরি নিলেন, তা এক বাটি কুমড়ো সেদ্ধর কাছে কিছুই না। একটা রুটিতে থাকে ৭০ শতাংশ ক্যালোরি। আর আধ কাপ কুমড়ো সেদ্ধয় ৫০ শতাংশ ক্যালোরি এবং রুটির দ্বিগুন পরিমাণ ফাইবার। আর শুধু ত্বক কেন? কুমড়োর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফরমুলা বয়সজনিত ছানি বা দৃষ্টিতে স্বল্পতার বিরুদ্ধে কাজ করে। হাই মাইনাস পাওয়ারের ফলে শীতকালে চোখ ড্রাই হয়ে যাওয়ার যাঁদের প্রবণতা, ডাক্তাররা সকালে উঠে এক কাপ কুমড়োর রস খেতে পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁদের। শীতের শরীরে পটাসিয়াম বেশ প্রয়োজন। ঠান্ডায় জবুথবু শরীর কম পরিশ্রম করতে চায়। ফলে মাসল ইত্যাদির সঠিক ব্যায়াম হয় না। ফলে মাসল ক্র্যাম্প জাতীয় সমস্যা হামেশাই দেখা দেয়। খাবারের পাতে প্রতিদিন কুমড়ো থাকলে এই সমস্যা কিন্তু অনেক কমে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। হাড়ের মেরামতিতেও নাকি কুমড়োর জুড়ি নেই। হাড় শক্ত করতে ক্যালসিয়ান জোগান দেয় কুমড়ো। এর ক্রিপটক্সানথিন আর্থাইটিসের কষ্টও দূর করে।
ত্বক বিশেষজ্ঞ সোমি জানাচ্ছেন, ‘আমাদের অনেক বিউটি প্রোডাক্টে আমরা কুমড়ো ব্যবহার করি। কুমড়োর রস খেতে আপত্তি থাকলে, সেদ্ধ কুমড়ো যদি ব্রেকফাস্ট টেবিলে থাকে, শীতের রুক্ষ ত্বকের সমস্যা মিটে যাবে। আর স্নানের আগে কুমড়ো আর গাজরের রস দিয়ে ভাল করে মাসাজ করে আধ ঘন্টা রেখে যান করে নিন। দেখুন ত্বক কেমন জেল্লা দেয়।’ তবে খাবারের বিকল্প তো আর কিছু নেই। রস মাখাও হল। আবার নানা রকম রেসিপি দেখে কুমড়োর বহু পদ বানিয়ে সুস্বাদু খাবারও না হয় পাতে থাকল। জেল্লাময় ত্বকের প্রশংসার জন্য এটুকু করতে ক্ষতি কি?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন