শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০১৩

কিভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন? পর্ব-০২



মানুষ জন্মলগ্ন থেকেই সৌন্দর্যের পূজারী। নিজেকে সুন্দর ভাবে উপাস্থাপন করতে চেষ্টার অন্ত নেই। আর মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্‍্য প্রধানত নির্ভর করে তার ত্বকের সৌন্দর্যের উপর। কি শীত কি গ্রীষ্ম – যে কোন ঋতুতেই ত্বকের যত্ন অপরিহার্‍্য। গরমে ত্বকের ক্ষতি হয় অনেক বেশি। এজন্য দায়ী সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি। এ সময় পুড়ে যাওয়াসহ ত্বকে কালো ছোপ পড়ে। তবে এর প্রতিকারে উপায় ও আছে। টক দই, গোলাপজল ও মূলতানি মাটির প্যাক প্রতিদিন যদি মুখে ত্বকে লাগান দাগ চলে যাবে। এ ছাড়া আটা, টমেটো ও কাঁচা হলুদের রস দিয়ে তৈরি প্যাক ও লাগাতে পারেন। ১৫ মিনিট পর গোলাপজল দিয়ে মুছে ফেলুন।

তাছাড়া ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে নিয়মিত ফেসিয়ালের বিকল্প নেই। এতে দূর হয় অনেক দিনের জমে থাকা ময়লা, ব্লাক ও হোয়াইট হেডস। ত্বকের ধরন বুঝে নিন ডিপ ক্লিনজিং, অক্সিজেন, ভিটামিন-সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, হার্বাল, স্পেশাল হার্বাল, অ্যাল ভেরা, ভেজিটেবিল ও ফ্লাওয়ার ফেসিয়াল। ত্বকের সৌন্দর্‍্য ফুটিয়ে তুলতে অ্যালভেরা ফেসিয়াল ও ডিপ ক্লিনজিং ফেসিয়াল মাসে একবার করাতে পারেন। ফেসিয়াল ত্বকের যত্নে জরুরি, কিন্তু তা হওয়া চাই সঠিক উপায়ে। এ জন্য নিজে না করে বিউটি পার্লারে ফেসিয়াল করা ভালো।

শুষ্ক ত্বকে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে পাকা পেঁপে চটকে মধু মিশিয়ে মুখে ও গলায় লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে আলতো করে ম্যাসেজ করে তুলে ফেলুন। ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ঠান্ডা দুধের ব্যবহারঠান্ডা দুধে তুলা ভিজিয়ে মুখে লাগান। দুধের সাথে মধু ও ব্যবহার করতে পারেন। টমেটো পাল্প, কুরানো শসা ও লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকের ওপর কিছুক্ষন লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে মিশ্রণটি আরেকবার হালকা করে ত্বকের ওপর লাগিয়ে নিন। এভাবে তিনবার করুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। আপনার ত্বকে ফুটে উঠবে জ্যোতি। পরিণত ত্বকের গ্লেস বজায় রাখতে পারেন আপেলের রস, সর ছাড়া দুধ ও ডিমের সাদা অংশের মিশ্রণ দিয়ে। আধা ঘন্টা ত্বকে লাগিয়ে রেখে প্রথমে দুধ দিয়ে ও পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

টিপসঃ

(১) প্রতিদিন ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

(২) তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অয়েল ফ্রি ক্লিনজিং জেল ও লোশন ব্যবহার করতে হবে।

(৩) ঘরোয়া প্যাক বেশি সময় রেখে দিলে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে, তাই বানানোর সাথে সাথে ব্যবহার করে ফেলুন।

(৪) প্যাক কাঁচের বাটিতে তৈরী করা ভালো।

(৫) ব্যবহারের আগে হাতের যেকোন অংশে প্যাকটি লাগিয়ে দেখুন এর থেকে কোনো অ্যালার্জি হয় কি না।

(৬) তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অয়েল ফ্রি কসমেটিকস ব্যবহার করাই ভালো।

(৭) রুপচর্চার পাশাপাশি খাদ্য তালিকাতেও প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সমৃদ্ধ তাজা ফল ও সবুজ শাক-সবজি রাখা জরুরি।

ত্বক কেটে বা পুড়ে গেলে, কি করবেন?

যে কোনো সময় অসাবধানতাবশত হাত বা পা কেটে যেতে পারে। আবার অনেক সময় আগুনে পুড়েও দুর্ঘটনা ঘটে। এ রকম দুর্ঘটনায় প্রাথমিক চিকিৎসা ঘরেই দেওয়া হয়। কিন্তু কাটা বা পুড়ার পরিমান যদি বেশি হয় তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

(১) হঠাৎ করে কেটে গেলে প্রথমে তা ডেটল বা স্যাভলন দিয়ে মুছে পরিস্কার করে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগাতে হবে।

(২) কাটা জায়গা থেকে যদি রক্ত পড়া বন্ধ না হয়, তবে সে জায়গায় ঠান্ডা কিছু বা বরফ চেপে ধরতে হবে।

(৩) কাটা অংশের ওপর পভিসেপ অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে তা ড্রসিং করে দিলে ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে উঠবে।

(৪) যদি জংধরা কোনো বটি বা ছুরি দিয়ে ক্ষতের সৃস্টি হয়, সে ক্ষেত্রে সাথে সাথে টিটেনাস ইনজেকশন নিতে হবে। অন্যথায় ইনফেকশন হওয়ার আশাংকা থাকবে।

(৫) কাটা অংশ যদি বেশি গভীর হয়, তবে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সেলাই করে নেওয়া ভালো। নয়তো পরবর্তী সময় সে জায়গায় দাগ পড়ে যেতে পারে।

(৬) এ সময় ‘ভিটামিন সি’ খেতে হবে। ভিটামিন সি ক্ষত স্থান সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

(৭) পুড়ে গেলে সে জায়গায় প্রথমে ঠান্ডা পানি দিতে হবে। তাতে করে যন্ত্রনা কম হবে।

(৮) পোড়া অংশে সিল ক্রিম লাগিয়ে গজ দিয়ে ড্রেসিং করে দিতে হবে। দিনে একবার ড্রেসিং বদলে দিতে হবে।

(৯) যদি ৫% এর বেশি জায়গা পুড়ে যায় তবে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন