বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৩

পুদিনা পাতার অনেক গুন



শতবর্ষী মানুষ নিয়ে আমাদের কৌতূহলের অন্ত নেই। পুদিনা পাতা প্রাচীনকাল থেকেই বেশ জনপ্রিয় ঔষধ হিসেবে পরিচিত।পুদিনা পাতা এক ধরনের সুগন্ধি গাছ। ইংরেজিতে যার নাম মিন্ট। এই গাছের পাতা তরি-তরকারির সাথে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে বেশি ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের বড়া তৈরির কাজে। পুদিনা এক প্রকারের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। বিশ্বের অনেক দেশেই পুদিনার গাছ জন্মে।এর বৈজ্ঞানিক নামঃ Mentha spicata ।
 

পুদিনায় রোজমেরিক এসিড নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরীতে বাধা দেয়। ফলে অ্যাজমা হয় না। এছাড়াও এ ঔষধি প্রোস্টসাইক্লিন তৈরীতে বাধা দেয়। তাতে শাসনালী পরিষ্কার থাকে।পুদিনায় রয়েছে মনোটারপিন নামক উপাদান। এটি স্তন, লিভার এবং প্যানক্রিয়াসে ক্যান্সার হওয়া প্রতিরোধ করে। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ফুসফুস, কোলন এবং ত্বকের ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।মুখের স্বাদ বাড়াতেও এটি খুব কার্যকর।গরম পানিতে সামান্য পরিমাণ পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে পান করুন।মুখে দুর্গন্ধ হলে পাতার রস জলে মিশয়ে কুলি করলে কাজ হয়। 

পুদিনার তাজা পাতা পিষে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর যদি তা ধুয়ে ফেলা যায়, তা হলে মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়। ব্রণ ওঠাও বন্ধ হয়।পুদিনার পাতা পিষে রস করে তার ভেতর দু’তিন ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে তা পান করলে ক্লান্তিভাবও দূর হয়।কোনো কারণে কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার নাকের কাছে কিছু তাজা পুদিনা পাতা ধরুন। দেখবেন, জ্ঞান ফিরে পেয়েছে লোকটি।পুদিনার পাতা ভালো করে পিষে তার রস ভালো করে মাথায় ব্যবহার করেন। যাদের চুলে উকুন আছে, তারা খুব উপকার পাবেন।শরীরের ব্যথা দূর করতে পুদিনা পাতার চা খুব কাজে দেয়। মাথা ও পেট ব্যথা নিরাময়েও পুদিনার পাতা খুব উপকারী। 

অতিরিক্ত গরমে ছোট-বড় প্রায় সবারই খাবারে বদহজম বা ফুড পয়জনিংয়ের সমস্যা দেখা যায়। এই পাতা পেটের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। দেহের জন্য ক্ষতিকর অণুজীবগুলো ধ্বংস করে। পুদিনাপাতা রান্নার চেয়ে কাঁচা খাওয়াটাই উত্তম। এতে পুষ্টিগুণ বজায় থাকে বেশি। সর্দি, হাঁচি, কাশি দূর করতেও এই পাতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পুদিনাপাতা, তুলসী পাতা, কাঁচা আদা, মধু মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা লাগা দ্রুত ভালো হবে। 

পুদিনা পাতার লাচ্ছির রেসিপিটি জেনে নিন:-উপকরন গুলো হলো- টক দই –২ কাপ, পুদিনা পাতা কুচি – এক গুচ্ছ, বিট লবন –১/২ চা চামচ, চিনি –পরিমানমতো বা জিরোক্যাল এক প্যাকেট, জিরাগুড়া–এক চা চামচ, পানি-১/২ কাপ । এবার- সব উপকরণ ব্লেন্ডারে নিয়ে ভালো মতো ব্লেন্ড করুন। তারপর ফ্রিজে রেখে উপরে পুদিনা পাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন রিফ্রেশিং পুদিনা লাচ্ছি। এখন, মিষ্টি লাচ্ছি না চাইলে চিনি বাদ দিতে পারেন। ঝাল খেতে চাইলে কাঁচামরিচ দিতে পারেন। বিট লবন বেশি চাইলে তাও দিতে পারেন।বিট লবনের পরিবর্তে লবনও দেয়া যায়।এই রেসিপিটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাকে একটি ধন্যবাদ দিবেন ।

ভাল থাকার জন্য দরকার ভাল খাবার। এতে স্বাস্থ্য থাকে ভাল ও মন থাকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন। বেশী করে 'পুদিনা পাতা' খান। সুস্থ থাকুন ।ভাল থাকুন ও ভাল রাখুন আপনার পাশের মানুষটিকে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন